আবুল হাশেম, রাজশাহী: রাজশাহীতে নবরূপ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের কর্মচারী শ্রী প্রকাশ সিং হত্যা মামলার রায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল আদালত। এছাড়া প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

রবিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক, অনুপ কুমার এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্যামপুর (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের জিন্নাত আলী মণ্ডলের ছেলে বাদল মন্ডল (৪৫), তানোর উপজেলার এনায়েতপুর (চোরখৈর) গ্রামের মৃত জলধর শিং এর ছেলে শ্রী বিমল শিং (৫০), তার স্ত্রী শ্রীমতি অঞ্জলী রাণী (৪৫), বিমল শিং এর ছেলে শ্রী সুবোধ শিং (২০)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নবরূপ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের পরিবেশক (কর্মচারি) নিহত শ্রী প্রকাশ সিং এর চাচী (বাদির বড় ভাই শ্রী বিমল সিং এর স্ত্রী) শ্রীমতি অঞ্জলি রাণীর সঙ্গে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্যামপুর (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের মো. জিন্নাত আলী মণ্ডলের ছেলে বাদল মন্ডলের প্রায় এক বছর যাবৎ পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। মামলার বাদি ও তার ছেলে নিহত প্রকাশ সিং এই অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করে আসছিলেন। ফলে আসামি বাদল মণ্ডল বাদি ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। একদিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে বাদল মণ্ডল শ্রীমতি অঞ্জলী রাণীর ঘরে ঢোকার চেষ্টাকালে মামলার বাদিসহ পরিবারের সবাই বিষয়টি দেখে ফেলে। পরে বাদলকে ধরার চেষ্টা করলে সে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনার আনুমানিক প্রায় এক মাস পর ২০২১সালের ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে পরদিন সকাল সাড়ে ৬টা এই সময়ের মধ্যে আসামি বাদলমণ্ডলসহ অজ্ঞাত আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্রী প্রকাশ শিং এর মাথায়, গলায়, পিঠে ও বাম হাতে কুপিয়ে হত্যা করে।

পরের দিন ২৯ এপ্রিল সকালে তানোর থানার বংশীধরপুর গ্রামের ব্রীজ থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরের একটি কাঁচা রাস্তা থেকে নিহতের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। আগের দিন সন্ধ্যায় চা খাওয়ার উদ্দেশ্যে নিহত প্রকাশ সিং কড়াইতলা মোড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুজির পর পরের দিন লাশ ওই স্থানে পাওয়া যায়। ওই দিনই নিহতের পিতা বাদি হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে তানোর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।